অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা। প্রাচীনকাল থেকেই প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধ হিসেবে অ্যালোভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে। একে ঘৃতকুমারী ও বলা হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা আনারস গাছের পাতার মতো। এবং ভিতরে রসালো পিচ্ছিল শ্বাস থাকে। আজকে আমরা জানবো অ্যালোভেরা সম্পর্কে। প্রিয় পাঠক, অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ভূমিকা
- অ্যালোভেরা কি
- অ্যালোভেরা উপকারিতা
- অ্যালোভেরার অপকারিতা
- অ্যালোভেরা কি কাজে আসে
- হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এলোভেরা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অ্যালোভেরা
- ত্বকের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা
- চুলের যত্নে অ্যালোভেরা উপকারিতা
- শেষ কথা
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক প্রাচীণকাল থেকেই অ্যালোভেরা ভেষজ ঔষধ হিসেবে কাজে আসছে। আজকে আমরা জানবো অ্যালোভেরার উপকারিতা ও উপকারিতা। অ্যালোভেরা কি কি কাজে আসে। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা কিভাবে কাজে লাগে। মুখের জন্য অ্যালোভেরা কিভাবে উপকারে আসে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অ্যালোভেরার। অ্যালোভেরা খাওয়ার নিয়ম। চুলের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিষউ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
অ্যালোভেরা কি
অ্যালোভেরা হচ্ছে বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ এবং দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মত। এর পাতা গুলি পুরো দুধ ধরে লালার মত পিচ্ছিল থাকে। অনেক এলাকায় অ্যালোভেরা জমিতে চাষ করে। এটা বিশেষ করে বেলে দোয়াষ মাটিতে এই গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়।
অ্যালোভেরা গাছে নিয়মিত পানি সেচ দিলেও এর গোড়ায় যাতে পানি না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়।গাছের গোড়ায় পানি আটকে থাকলে গাছের পাতা কালচে হয়ে মারা যেতে পারে। অ্যালোভেরার বংশবৃদ্ধি সাধারণত শেকড় থেকে হয়ে থাকে।
অ্যালোভেরা উপকারিতা
বহু যুগ ধরে অ্যালোভেরা মানুষের ঔষধি কাজে বিভিন্নভাবে উপকারে আসছে। এই উদ্ভিদটি দেখতে ছোট আকারের হলেও এর উপকারিতা বিশাল চলুন জেনে নেওয়া যাক এলোভেরার উপকারিতা সম্পর্কে।
- ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে
- ওজন কমাতে এলোভেরা
- রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়
ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে
ত্বকের ছোটখাটো কাটা পোড়া, এলার্জির সমস্যা দূর করতে খুবই কাজে আসে অ্যালোভেরা। কাটা অথবা পোড়া জায়গায় একটুখানি অ্যালোভেরা রস বের করে কাটা জায়গায় লাগালে ব্যথা দূর হয়ে যায় ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি ছাড়াতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরার রস শরীরে লাগালে তোকে আদ্রতা বজায় রাখে। এছাড়াও ও অ্যালোভেরা জেল মধু দুধ হলুদ ইত্যাদি মিশিয়ে মুখে লাগালে মুখের মেস্তা ও ব্রোন এর দাগ দূর করে।
ওজন কমাতে এলোভেরা
অ্যালোভেরাতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যার কারণে ওজন কমাতে এলোভেরার জরি মেলা ভার। তে থাকে এমাইনো এসিড, এনজাইম আর স্টেরল। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস এলোভেরা জুস বানিয়ে খেলে অতি দ্রুতই ওজন কমে যাবে।
চরক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়
বহু বছর ধরে ডায়াবেটিস এর সমস্যার জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে অ্যালোভেরার জুস। এলোভেরা জুস নিয়মিত পান করলে ইনসুলিন সিনসিটিভিটি বাড়ে। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ আরো সহজ হয়।
অ্যালোভেরার অপকারিতা
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা। সব জিনিসের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতা ও আছে। অ্যালোভেরা ও ব্যতিক্রম নয় অ্যালোভেরা কিছু অপকারিতা আছে। অ্যালোভেরা সম্পর্কে চিকিৎসকগণ বলেছেন এলোভেরা নিরাপদ যখন এটি ওষুধ বা জেল আকারে চামড়ায় প্রয়োগ করা হয়।
কিন্তু অ্যালোভেরা জেল যখন প্রাকৃতিকভাবে বের করা হয় তখন ভুল বসাতে এর রসালো অংশের সঙ্গে আলো লেটেক্স নামক রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে যায় যার ফলে মানবদেহের জন্য এটি খুবই ক্ষতিকর। এটি এলোভেরা পাতায় বিদ্যমান থাকে। যার রং হলুদ।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ব্যবহার করা ঠিক নয়। আবার অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালোভেরা জুস সেবন করলে প্রস্রাবের রং লালচে ভাব হয়ে যেতে পারে। পরিমাণ মতো অ্যালোভেরা খাওয়া ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালোভেরা খেলে ডায়রাও হতে পারে। আবার যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের এলার্জি বৃদ্ধি হতে পারে।
অ্যালোভেরা কি কাজে আসে
দৈনিন্দন জীবনে অ্যালোভেরার গুরুত্ব অপরিসীম ।যারা একটু মোটা ওজনে অতিরিক্ত বেশি অ্যালোভেরা তাদের জন্য খুবই উপকারে আসে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে অ্যালোভেরা জুস খেলে ওজন তাড়াতাড়ি কমে যাই। এছাড়াও এলোভেরা প্রতিরোধে কার্যকরী। জন্য খুবই উপকারী। ত্বকের দাগ ব্রণ এবং রুক্ষতা দূর করতে অনেক কার্যকরী। ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা।অ্যালোভেরাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়া্ম, অ্যামাইনো এসিড ইত্যাদি। অ্যালোভেরা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে অ্যালোভেরা জুস খেলে শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যা দেহের প্রতিটি কোনায় জমে থাকা টক্সিক উপাদান গুলোর বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। এতে করে দেহের উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাই। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণে হজম শক্তি কমে যায়। এই হজম শক্তি বাড়াতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অ্যালোভেরা জুস প্রতিদিন সকালে খেলে আমাদের শরীরের পাকস্থলীর রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বধ হজমের মতো রোগ আর ঘেষতে পারে না।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অ্যালোভেরা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অ্যালোভেরা জুস অত্যন্ত কার্যকরী। অ্যালোভেরা জেল প্রাকৃতিকভাবে রক্ত চিনি পরিমাণ কমায়। নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে যায়। এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। এছাড়াও অ্যালোভেরা জেলে ফাইটোস্ট্যারলসের অ্যান্টি হাইপার গ্লাইসেমিক প্রভাব আছে যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ত্বকের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা
আমাদের প্রত্যেকদিন বিভিন্ন কাজে বাহিরে যেতে হয়। কিন্তু বাইরে বেরোলে ধুলাবালিতে ত্বকের অবস্থা রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে পড়ে। আর অ্যালোভেরা ত্বকের রুক্ষতা ও শোচনীয়তা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বকের রোদের পোড়া দাগ মুক্ত করতে, মসৃণ রাখতে দাগ মুক্ত করতে, ত্বকের ব্রণের উপদ্রব কমাতে অ্যালোভেরা সাহায্য করে।
চুলের যত্নে অ্যালোভেরা উপকারিতা
অ্যালোভেরা চুলে ব্যবহারে চুল মসৃণ ও সুন্দর করে তোলে। চুল পড়া কমায়, চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। ভিটামিনে সমৃদ্ধ অ্যালোভেরা চুলে পোষ্টটির যোগান দেয়। এছাড়াও অ্যালোভেরাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রটিয়োলাইটিক এনজাইম যা চলে ড্যামেজকে ছাড়িয়ে তুলতে পারে। এর ফলে আপনার চুলে অধিক পরিমাণে পুষ্টি হয়, আর চুল বাড়েও খুব তাড়াতাড়ি। এছাড়াও অ্যালোভেরা খুশকি সমস্যা থাকলে দূর করে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক পরিশেষে বলা যায় অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন উপকারে আসে। অ্যালোভেরা যেমন উপকারিতা আছে তেমনি উপকারিতা আছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url